অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস একেবারে দুর্নীতির বিপক্ষে একজন মানুষ। তবে তার উপদেষ্টা পরিষদের কেউ দুর্নীতি করলে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।
তিনি বলেন, শুধু শাস্তি দিয়ে দুর্নীতি পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব নয়। সেবাদাতা ও সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে পারস্পরিক আন্তরিকতা ও সুসম্পর্কই পারে দুর্নীতি অনেকাংশে লাঘব করতে। দুদক সেবাদাতা ও গ্রহীতাদের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনে কাজ করে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকালে নগরীর স্টেশন রোডে দুদকের বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়ে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কয়েকটি নিউজপেপারে এসেছে এই সরকারের কয়েকজনের বিরুদ্ধে। এই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার। আমরাও বিধিবদ্ধভাবে কাউকে ছাড় দেবো না। তবে কারো দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তা যেন সুনির্দিষ্ট হয়।
তিনি বলেন, আমরা যদি শুধু বলি কোটি কোটি টাকা অমুক আত্মসাৎ করেছেন, দুর্নীতি করেছেন বললে হবে না। বলতে হবে কোথা থেকে করেছেন, কিভাবে করেছেন। এই অংশগুলো যদি আমরা প্রমাণ করতে না পারি, তাহলে শেষ পর্যন্ত সেই অভিযোগ টিকবে না। এমনটি উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থাকে, সেই অভিযোগগুলো যদি সুনির্দিষ্ট হয় তাহলে নিয়ে আসুন।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, গত এক বছরে অনেক মামলা হয়েছে এবং পুরনো অনেক মামলা বিগত সময়ে ধামাচাপা ছিল, সেই মামলাগুলো পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে নতুন মামলাগুলো দেখা হচ্ছে গুরুত্ব দিয়ে।
এছাড়াও অনেক জায়গায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে, বিশেষ করে সেবাদান প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ থাকে, সেসব প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুর্নীতি কমিশনের নিজস্ব কিছু বিধিবদ্ধ আইন আছে। আইনের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। দুর্নীতি বাংলাদেশে অনেক ধরনের আছে, কিন্তু আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমরা সরকারি লোক। টাকা পাচার, অবৈধ আয় বিষয়ে নজর রাখার চেষ্টা করে দুদক। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা চলছে। আরও কয়েকটি বিষয় তদন্তাধীন। তদন্ত করে যদি শেষপর্যন্ত প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে মামলা করা হবে বলে জানান তিনি।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদকের ঝুলে থাকা মামলাগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি হয় সেই ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
এরপর দুপুরে রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম এনডিসি, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল, পুলিশ সুপার আবু সাইমসহ প্রশাসনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।